কাঁচা আমলকি চুলে দেওয়ার নিয়ম।benefits of amalaki powder

কাঁচা আমলকি চুলে দেওয়ার নিয়ম


আমলকি চুলের যত্নে খুবই কার্যকারী। চুলকে ঘন ও মজবুত করে তুলতে আমলকির জুড়ি মেলা ভার।চুলে আমলকির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে চুলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়ে থাকে।চুলের যত্নে আমলকি ব্যবহার করার রয়েছে কিছু নিয়ম। এই সকল নিয়ম গুলো মেনে চুলের যত্নে আমলকি ব্যবহার করলে খুবই অসাধারণ রেজাল্ট পাওয়া যায়। তাই আজকের পোস্টে আমলকি চুলে দিলে কি হয়, আমলকি দিয়ে চুলের যত্ন, ও আমলকি চুলে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। 


আমলকি চুলে দিলে কি হয় 


খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে চুল লম্বা করতে ও চুল পড়া রোধ করতে আমলকি চুলে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।আমলকিতে বিদ্যমান থাকা ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট ভিটামিন ও খনিজ উপাদান মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধিকে উদ্দিপ্ত করে থাকে।তাছাড়া আমলকির ভিতরে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন প্রোটিন তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে যা চুলের ফলিকলের মৃত কোষ কে নতুন চুল দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া আমলকি চুলের জন্য প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে থাকে।যাদের চুলে খুশকির সমস্যা রয়েছে তারা চুলের যত্নে আমলকি ব্যবহার করতে পারেন কেননা চুলে আমলকি ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 



আমলকি চুলে কি উপকার করে 


আমলকি চুলে দিলে চুলের অনেক ধরনের উপকার হয়ে থাকে। নিচে আমলকি চুলে ব্যবহার করার মাধ্যমে যে ধরনের উপকার গুলি পাবেন তা পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলোঃ-



চুল মজবুত করে থাকেঃআমলকির রস আমাদের চুলের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। আমলকির রস নিয়মিত চুলের ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলের ফলিকলের সঠিক স্বাস্থ্য বজায় থাকে। তাছাড়া আমলকির রস চুলকে ভেতর থেকে শক্তিশালী ও মজবুত করে তুলতে সাহায্য করে থাকে। 



খুশকির সমস্যা দূর করে থাকেঃঅনেকের মাথার খুশকি সাধারনত সূক্ষ্মতার কারণে হয়ে থাকে। আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি মাথা ও ত্বকের সূক্ষ্মতার সমস্যা রোধ করে থাকে যার ফলে খুশকি হয় না। কেননা আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি ও এন টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকে খুশকি ও চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে থাকে। 



চুল ঘন করে তুলে থাকেঃআমলকির রস মাথার চুলে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল ঘন হয়ে ওঠে।কেননা আমলকিরতে থাকা প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপাদান চুলের স্কাল্পের সঠিক স্বাস্থ্য বজায় রাখে ও চুল দ্রুত ঘন করে তুলতে সাহায্য করে। 



চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করেঃআমলকি চুলের যত্নে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে থাকে। কেননা একটি আমলকিতে থাকে ৮১.২ শতাংশ পর্যন্ত আদ্রতা যা সূক্ষ্ম চুলের জন্য অনেক উপকারী।তাছাড়া যাদের মাথার ত্বক অনেক তৈলাক্ত তারা চাইলে আমলা পাউডার ব্যবহার করতে পারেন এতে ভালো উপকারিতা পাবেন।


আমলকি কি চুল পড়া বন্ধ করে


আমলকি চুল পড়া বন্ধ করতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত আমলকির রস পান করার মাধ্যমে বয়সের আগে চুল পাকা রোধের সমস্যা দূর হয়।অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার আমলকির রস দিয়ে চুল পরিষ্কার করে থাকে তাহলে তার চুল পড়া অনেক কমে যাবে এবং চুল ভেতর থেকে মজবুত হয়ে উঠবে। তাহলে অবশ্যই বোঝা যাচ্ছে আমলকি চুল পড়া রোধ করতে জাদুকারী একটি উপাদান।


আমলকি চুলে ব্যবহারের নিয়ম।আমলকি চুলে দেওয়ার নিয়ম


আমলকি চুলের যত্নে কিভাবে ব্যবহার করবেন বা আমলকির সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানা অবশ্যই জরুরী। আমলকি অনেকে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করে থাকেন আবার অনেকে সরাসরি আমলকির রস চুলে ব্যবহার করেন। তবে আমলকি আপনারা চাইলে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।



আমলকি গুড়া ও ভিটামিন ই ক্যাপসুলের প্যাকঃপ্রথমে একটি পাত্রে অল্প পরিমাণ আমলকির গুড়া ও একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তেল ও খানিকটা এলোভেরার রস দিয়ে ভালো করে মিক্স করে নিতে হবে। মিশ্রণটি তৈরি করা হয়ে গেলে চুলে হালকা করে লাগাতে হবে এবং ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করতে হবে।মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করার পাশাপাশি দ্রুত নতুন চুল গজাতে এই প্যাকটি সাহায্য করে থাকে। 



আমলকির গুড়া ও লেবুর রস চুলে ব্যবহারের নিয়মঃআমলকির গুড়া ও লেবুর রস চুলের ব্যবহার করলে অসাধারণ উপকারিতা পাবেন।প্রথমে একটি পাত্রে আমলকি গুড়া, ডিমের সাদা অংশ, নারিকেল তেল এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ফেলতে হবে। উপাদান গুলো ভালোভাবে মিক্স করা হয়ে গেলে মাথায় সুন্দর করে লাগাতে হবে এবং ২০ থেকে ২৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। তারপর হালকা শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি চুলের জন্য প্রাকৃতিক কন্ডিশনার এর মত কাজ করে থাকে এবং চুল পড়া রোধ করে থাকে। 



আমলকি ও মেহেদী  চুলে ব্যবহারের নিয়মঃআমলকি চুলের সূক্ষ্মতা প্রতিরোধ করে আদ্রতা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে থাকে। আমলকি ও মেহেদী দিয়ে প্যাক তৈরি করে আপনারা চুলের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন। এই প্যাক ব্যবহার করার মাধ্যমে চুল ভেতর থেকে ঘন ও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। সপ্তাহে দুইবার চুলের যত্নে আমলকি ও মেহেদির প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। 



শেষ কথা, আমলকি চুলে ব্যবহারের নিয়ম বা আমলকি গুড়া চুলে দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ইতিমধ্যে জানা হয়ে গিয়েছে। চুলের সঠিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ও চুল ঘন ও মজবুত করে তুলতে আমলকি ব্যবহার করা যেতে পারে।কেননা চুলের যত্নে আমলকি হচ্ছে অসাধারণ একটি প্রাকৃতিক ঔষধি। 

পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না ।

comment url