এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন খরচ কত

এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন খরচ কত


এপেন্ডিসাইটিস হলো ভার্মিফর্ম অ্যাপেন্ডিক্সের প্রদাহ সাধারণ লক্ষণসমূহ। এর কারণে অনেকের তলপেটের ডান দিকে ব্যথা,জ্বর ও বমির মত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তবে এই রোগের লক্ষণ অনেকের ক্ষেত্রে প্রকাশ পায় না। এপেন্ডিসাইটিস যদি একবার ফেটে যায় তাহলে পুরো পেটে সংক্রমণ ছড়িয়ে যায় যা পেরিটোনিয়ামের মতো প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। অনেকের অ্যাপেন্ডিসাইটিস হওয়ার ফলে অপারেশন করতে হয়। যার কারণে অনেকেই ইন্টারনেটে এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন খরচ কত বা এফেন্ডিসাইটিস অপারেশন করার জন্য বর্তমানে বাংলাদেশে কত টাকা লাগছে এই নিয়ে প্রশ্ন করে থাকেন। তাই আজকের পোস্টে এই বিষয়ে আপনাদের বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-



এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন খরচ


অ্যাপেন্ডিসাইটিস খরচ কত এই বিষয়ে অনেকের ধারণা না থাকার কারণে বিভ্রান্তিতে পড়ে থাকেন। অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করলে কোন ধরনের ব্যাথা লাগে না। বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ ভেদে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন খরচ কমবেশি হয়ে থাকে। তবে যারা সদর হাসপাতালগুলোতে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করে থাকেন তাদের ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে। এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করার আগে রোগীকে এ্যনেশথেসিয়া ইঞ্জেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলা হয় যার মাধ্যমে রোগী টের পায় না। তবে বেশিরভাগ হাসপাতাল গুলোতে ১০ থেকে ১২০০০ টাকার মধ্যে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন হয়ে যায় অনেকের মতে। 



এপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের পর করণীয়/এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন পরবর্তী জটিলতা


প্রত্যেক অপারেশনের পর রোগীর সাধারণ কিছু সমস্যা দেখা দেয় যার কারণে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের পরও কিছু সমস্যা দেখা দিবে এটাই স্বাভাবিক।তাই এই সমস্যাগুলো সম্পর্কে রোগীকে আগে থেকেই জেনে রাখা উচিত তাছাড়া পরবর্তীতে আতঙ্কিত হতে পারে:-



বমি বমি ভাবঃঅপারেশনের পর অনেক রোগীর বমি বমি ভাব আসতে পারে। এই সমস্যাটা মূলত হয়ে থাকে এনএসথ্রিয়ার  ওষুধ ব্যবহারের জন্য। এটা কিছুদিনের মধ্যেই আবার চলে যায়। 



পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাঃঅপারেশনের সময় যেহেতু নারী ভুরি নাড়াচাড়া করা হয় তাই অনেক ক্ষেত্রেই নারীর গতি কিছুটা বন্ধ হয়ে যায়। এটাকে বলা হয়ে থাকে প্যারালাইটিক আইলিয়াস।অপারেশনের পর কিছুদিন এই সমস্যাটা থাকতে পারে তবে উঠে হাঁটাহাঁটি করার পর এই সমস্যাটা ধীরে ধীরে অনেকটা চলে যাই। তারপরেও যদি ঠিক না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।



অনেক বেশি পিপাসা লাগেঃরোগীর অপারেশনের পর অনেক বেশি পিপাসা লাগে। কেননা অপারেশনের দীর্ঘ সময় রোগী যেহেতু পানি পান করেনি তাই এই সমস্যাটা হয়ে থাকে। 



ফুসফুসে রক্ত জমাটঃসাধারণত এই সমস্যাটাকে বলা হয়ে থাকে পালমোনারি এমবুলিজম। ডিভিডি থেকে জমাট রক্ত ছুটে গিয়ে রক্ত স্রোতে ভেসে যাওয়ার মাধ্যমে ফুসফুসের রক্তনালিতে জমলে এই সমস্যাটা হয়ে থাকে। তবে এই সমস্যাটা শুধুমাত্র কয়েকজন রোগীর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে তাছাড়া বেশিরভাগ রোগীকেই এই সমস্যাটা ফেস করতে হয় না। 



প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারেঃঅনেক রোগীর সাময়িক সময়ের জন্য প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যাটা সাধারণত এনেস্থেশিয়ার জন্য হয়ে থাকে। তবে এই সমস্যাটাও ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়।



অপারেশনের স্থানে ব্যথা বা ফোলা বাড়তে থাকাঃঅনেক সময় রোগীর অপারেশনের পর অতিরিক্ত ব্যাথা হতে থাকে।অর্থাৎ সেলাইয়ের স্থানে ব্যথা বা ফোলা বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীকে সরাসরি ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।



সেলাইয়ের স্থান থেকে রক্ত, পানি, পুঁজ অথবা কোনো তরল বেরিয়ে আসাঃঅ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন হওয়ার পর অনেক রোগীর ক্ষেত্রে সেলাইয়ের স্থান থেকে রক্ত পানি ও পুঁজ পড়ার সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। তারা এই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন এবং তাদের চিকিৎসা অনুযায়ী এই সমস্যাটা সমাধান করবেন।



এপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের পর খাবার


এপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের পর আমাদের শরীরের উপর গুরুতর চাপ পড়ে থাকে। তাই অবশ্যই এই ক্ষেত্রে আমাদের পুষ্টিকর কিছু খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক ডাক্তার। এপেনডিসাইটিস অপারেশন করার পরে প্রথম দিন যেহেতু বেশি ক্ষুধা থাকে না তাই এই দিন আপনারা চাইলে জল বা গরম মিষ্টি চা পান করা যেতে পারে। ছোট ছোট চুমুক মেরে খেতে হবে যেন বমি না হয়। তাছাড়া প্রথম দিনের সন্ধ্যার মধ্যে খাদ্যে চালের ঝোল, চর্বিযুক্ত মুরগির ঝোল ও ফলের জেলি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।অপারেশনের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে দই  সেদ্ধ জুচিনি বা কুমড়ো পিউরি, ফলের জেলি খেতে পারেন।দিনে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় বার ছোট অংশে এই খাবারগুলো খেতে হবে। তাছাড়া এই সময়ে জল ও তা ছাড়াও পাতলা রস,ভেজস চা ও বেরি ফলের পানি খেতে পারেন।অপারেশন সম্পূর্ণ হওয়ার চতুর্থ দিন থেকে আপনি নিজের খাবার বাড়াতে পারেন। এই সময়ে মেশোড সুপ বাদ দুগ্ধজাত পণ্যগুলো খাওয়া যেতে পারে। সপ্তম দিন থেকে শুরু করে, আপনি মেনুতে দুগ্ধজাত পণ্য, পনির, শুকনো এপ্রিকট, মার্মালেড এবং মধু অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।তারপরে এইভাবে দুই থেকে তিন সপ্তাহ হয়ে গেলে স্বাভাবিক ডায়েটে ফিরে আসতে পারেন এবং এই সময়ে ডিম, কাঁচা ফল এবং বেরি, লেবু, মাশরুমের খাবার খেতে পারেন। 




শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন খরচ বা এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন খরচ বাংলাদেশে কত টাকা নেওয়া হয়ে থাকে এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।


পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না ।

comment url