এজিথ্রোমাইসিন কোন রোগের ঔষধ । এজিথ্রোমাইসিন খাওয়ার নিয়ম

এজিথ্রোমাইসিন কোন রোগের ঔষধ । এজিথ্রোমাইসিন খাওয়ার নিয়ম


আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলেই ভাল আছেন। এজিথ্রোমাইসিন একটি এন্টিবায়োটিক বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের জন্য ব্যবহার করা হয়। আসুন আমরা জেনে নেই এটা কিভাবে কোথায় এবং কোন কোন রোগের ঔষধ বা কোন রোগের জন্য ব্যবহার করা হয়।এগুলো নিচে সব উল্লেখ করা হলো:-

এজিথ্রোমাইসিন এর উপকারিতা

আমরা জানি যে এজিথ্রোমাইসিন একটি উপকারী ঔষধ। এই ওষুধটি আমাদের ফুসফুস, কান,ত্বক ও যৌন ঘটিত রোগের সংক্রমণেও এই ওষুধটি বহুল ব্যবহৃত। এছাড়া ভ্রমণকারীর ডায়রিয়া ও মধ্য কানের সংক্রমনে ওষুধটি বহুল ব্যবহৃত। বিশেষ করে এই এজিথ্রোমাইসিন ঔষধটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট রোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। আর এই ওষুধটি ব্যবহারের জন্য আপনাদের আশেপাশের অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ও প্রেসক্রিপশন লিখিত নিয়মাবলির মাধ্যমে ঔষধ সেবন করবেন।

এজিথ্রোমাইসিন ওষুধটি কিভাবে কাজ করে

এজিথ্রোমাইসিন ওষুধটি এটি ব্যাকটেরিয়া জনিত  রোগের ঔষধ। এটি সংবেদনশীল মাইক্রো -অর্গানিজমের ৫০s রিবোসোমাল সাব ইউনিটের সাথে নিজেকে বাঁধন করে প্রোটিন সংশ্লেষনকে বাধা দেয়। এটি ট্রান্সপেপটিডেশন এবং স্থানান্তরের সাথে লংঘন করে এবং এভাবে প্রোটিন সংশ্লেষণ এবং  কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। এই এজিথ্রোমাইসিন ঔষধটি আস্তে ও ধীরে খুব সংবেদনশীল ভাবে কাজ করে।

এজিথ্রোমাইসিন কোন রোগের ঔষধ  

এজিথ্রোমাইসিন সাধারণত মাইক্রোলাইড অ্যান্টিবায়োটিক গুলির একটি গোষ্ঠীর অন্তঃগত যা অনেকগুলি সংক্রমনের জন্য উপকারী। যেমন ভ্রমণকারীর ডায়রিয়া, মধ্য কানের সংক্রমণ ইত্যাদি। এছাড়া অন্যান্য ঔষদের সঙ্গেও এটা ম্যালেরিয়া নিরাময়ের কাজও ব্যবহার করা হয়। এটি বিভিন্ন অন্ত্রের সংক্রমণ এবং সংক্রমিত যৌন আক্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয। মনে রাখবেন এই ওষুধটি সাধারণ ঠান্ডা, ফ্লু বা ভাইরাস ঘটিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা হয় না।

কারণ এটি শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের  বিরুদ্ধে সক্রিয়। এজিথ্রোমাইসিন এর কিছু নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের চিকিৎসায় ও প্রতিকারের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রয়েছে, মধ্য কর্ণের সংক্রমণ, স্টেপ থ্রোট,নিউমোনিয়া, টাইফয়েড,ব্রংকাইটিস ও সায়নাসের প্রদাহ রোধে ব্যবহার করা হয়। এজিথ্রোমাইসিন ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিন সংশ্লেষণকে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ করে। এটি ব্যাকটেরিয়ার রাইবোজোমের ৫০ নং সাব ইউনিটের সাথে যুক্ত হয়ে ব্যাকটেরিয়ার সজাগ ও ট্রান্সলেশন বন্ধ করে। এজিথ্রোমাইসিন ওষুধটি  বিশেষ করে এই সমস্ত রোগের প্রতিরোধের জন্য ব্যবহার করা হয়।

এজিথ্রোমাইসিন ৫০০ কিসের কাজ করে

এজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমিত রোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটা দিনে একবার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়।এজিথ্রোমাইছেন ৫০০ এমজি এই ওষুধটি  নিউমোনিয়া,গলার সংক্রমন যেমন চামড়ার ইনফেকশন, সাইনাস ইনফেকশন, লাইম ডিজিজ এবং কিছু যৌন সংক্রমণের মতো বুকের সংক্রমণের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। শিশুদের মধ্যে কানের সংক্রমণ এবং বুকে সংক্রমনে এই এজিথ্রোমাইসিন ৫০০ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এজিথ্রোমাইসিন খাওয়ার নিয়ম

এজিথ্রোমাইসিন সাধারণত দিনে একবার সেবন করা হয় এবং প্রতিদিন একই টাইমে এই এজিথ্রোমাইসিন ওষুধটি সেবন করতে চেষ্টা করুন। সংক্রমনের চিকিৎসায় স্বাভাবিক ডোজ ৩ থেকে ১০ দিনের জন্য প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রাম।যদি আপনার লিভার বা কিডনির সমস্যা থাকে,অথবা শিশুদের ক্ষেত্রে ডোজটি কম হতে পারে। এই এজিথ্রোমাইসিন কখনো কখনো দীর্ঘমেয়াদি সেবনের জন্য নির্ধারিত করা হয় কারণ যদি আপনি বুকের ইনফেকশন অনুভব করতে থাকেন এই ক্ষেত্রে  সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহার করতে হবে। এই নিয়মগুলো অনুযায়ী এজিথ্রোমাইসিন ঔষধ গুলো আমরা সেবন করতে পারি  অথবা অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরমাণু অনুযায়ী  এবং তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী আমরা ওষুধগুলো সেবন করবো

এজিথ্রোমাইসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সমস্ত ঔষধের মতো এই যে এজিথ্রোমাইসিনেরও  পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সবার ভিতরে বিদ্যমান দেখা যায় না। অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে চলুন এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো জেনে নেওয়া যাক,অসুস্থ বোধ করা, বমি বমি ভাব,ডায়রিয়া হওয়া,আপনার রুচির অনুভূতিতে পরিবর্তন আসা,মাথা ব্যথা করা , মাথা ব্যথা বা ক্লান্ত বোধ হওয়া, এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হল সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। চলুন এই এজিথ্রোমাইসিন এর  কিছু মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জেনে নেওয়া যাক,গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো বিরল এগুলো খুব কম দেখা যায় এগুলো হলো,

➡️হলুদ ত্বক বা আপনার চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া।

➡️বুকে ব্যথা ও দ্রুত বা অনিয়মিত স্পন্দন।

➡️আপনার পেটে বা পিঠে গুরুতর ব্যথা অনুভব হওয়া।  

➡️শরীরে এলার্জি দেখা দেওয়া।

➡️প্রসবের কালার হলুদ হয়ে যাওয়াএবং প্রসবের সময় জ্বালাপোড়া করা। 

এই সমস্ত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো যদি আপনার ভিতরে দেখা যায় তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার আশেপাশের অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করুন এবং ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী  ওষুধ সেবন করুন নিজে সুস্থ থাকুন এবং অন্যকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন।

এজিথ্রোমাইসিন কয়টা খেতে হবে

এজিথ্রোমাইসিন ট্যাবলেট টি ৫০০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট হিসেবে বাজার জাত করা হয়। একটি প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর জন্য দৈনিক ১ টি ৫০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল সেবন করতে হবে। আর এটা প্রতিনিয়ত একটি করে সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৮ দিন পর্যন্ত এটা সেবন করা যেতে পারে।

এজিথ্রোমাইসিন ঔষধ এর পারস্পরিক ক্রিয়া গুলো কি

যখনই আপনি একাধিক কোন ঔষধ গ্রহণ করেন বা কোন নির্দিষ্ট খাবার অথবা কোন নির্দিষ্ট পানির সাথে এটি গ্রহণ করেন, তখন ঔষধটি কিছু খাবার ও পানিয় এর সাথে পারস্পরিক ক্রিয়া করতে পারে। এবং আপনি এই ওষুধের পারস্পরিক ক্রিয়ার ঝুঁকির ভেতর পড়তে পারেন। এজন্য এই এজিথ্রোমাইসিন ঔষধটি আমাদের খুব সাবধানতার সাথে সেবন করতে হবে। কারণ যেন আমরা কোন ঝুঁকির মধ্যে না পড়ি।আর এই ঔষধ গুলো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে।

এজিথ্রোমাইসিন ওষুধের দাম কত

এজিথ্রোমাইসিন ওষুধটি হলো একটি এন্টিবায়োটিক ঔষধ। যা আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই এজিথ্রোমাইসিন ঔষধ দিয়ে শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমনের বিরুদ্ধেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও এটি অন্যান্য ঔষধের সাথে কখনো কখনো ম্যালেরিয়া নিরাময়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর এই এজিথ্রোমাইসিন ওষুধটি যতক্ষণ পর্যন্ত কোন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সেবন করতে না বলা পর্যন্ত আপনারা এই ওষুধটি সেবন করিবেন না । আর এই এজিথ্রোমাইসিন ৫০০ এর মূল্য ৩৫ টাকা।

এজিথ্রোমাইসিন ওষুধের সংরক্ষণ

এজিথ্রোমাইসিন ওষুধটি আমাদেরকে ভালো জায়গায় সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। এই ওষুধটা আমরা শুষ্ক ও ঠান্ডা জায়গায় রাখার চেষ্টা করবো, ও বাচ্চাদের হাতের নাগালের বাইরে রাখবো। তাছাড়া এই অবস্থায় যদি আমরা গরম কোন জায়গায় রাখি এই ওষুধটা গরমের তাপে নষ্ট ও খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যাবে। বাচ্চাদের হাতের নাগালে ওষুধ দিয়ে থাকলে বাচ্চারা সেবন করলে এতে বিপরীত সমস্যা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য আমরা এই এজিথ্রোমাইসিন ওষুধটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত ভাবে শুষ্ক ওর ঠান্ডা জায়গায় রাখবো।

শেষ কথা,আশা করি আজকের পোস্টে যারা পড়েছেন তারা এজিথ্রোমাইসিন খাওয়ার নিয়ম ও এজিথ্রোমাইসিন কোন রোগের ঔষধ এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। 

পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না ।

comment url