হাত পা চাবানোর চিকিৎসা। হাত পা চাপানোর ঔষধ

হাত পা চাবানোর চিকিৎসা। হাত পা চাপানোর ঔষধ


আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক গন আমরা জেনে থাকি যে রক্তের উপাদানগত সমস্যা বা কোন কারনে সাময়িকভাবে রক্তের ঘনত্ব বৃদ্ধি পেলে রক্ত ধমনীর ভেতরে জমাট বেঁধে যাই ও রক্ত চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়। হঠাৎ করে হাত পা ঠান্ডা হয়ে গিয়ে তীব্র ব্যথা শুরু হওয়া এছাড়াও হাত-পা দ্রুত ফ্যাকাশে অথবা নীল হয়ে যাওয়া শুরু করে,আর এগুলোকেই হাত-পা চাবানো বলা হয়ে থাকে। তাহলে আসুন আমরা জেনে নেই হাত-পা চাবানোর কারণ, হাত পা চাবানোর  চিকিৎসা কি, হাত পা চাবানো ঔষধের নাম ও তার মূল্য কত, ও হাত-পা চাবানোর জন্য কোন ওষুধ খাওয়া ভালো এ সমস্ত কিছুই নিচে আলোচনা করা হলো।

হাত পা চাবানোর কারণ

সাধারণত আমাদের রক্তের বিভিন্ন ধরনের লবণের ঘাটতি বা মাংস পেশিতে রক্ত প্রবাহ কমে গেলে হাত পা চাবানো শুরু হতে পারে। যাদের বাত ব্যথা আছে তাদের হাত পায়ের অস্তি সন্ধিতে অক্সলেড  জমা হওয়ার কারণে  হাত পা চাবাতে পারে। তাছাড়া বেশি হাঁটা হাঁটি করলে পায়ের পেশীতে  ল্যাকটিক এসিড তৈরি হয়। ডাইবেটিস রোগী ও ধূমপায়ীদের হাত পা চাবায় পায়ে রক্ত চলাচলের বিঘ্ন ঘটার কারণে। শিশুরাও অনেক ছোটা ছুটি করে বলে তাদের হাত পায়ের পেশিতে রক্ত প্রবাহের টান পড়তে পারে। এছাড়াও অনেকক্ষণ রোদে বা গরমে হাঁটা হাঁটি করলে লবণের ঘাটতি হয় ফলে হাত-পা চাবাই। এছাড়াও ঋতু পরিবর্তন, পানি শূন্যতা, পুষ্টির অভাব, অতিরিক্ত ব্যায়াম, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এমনকি হতাশাও হাত পা কামড়ানোর অথবা চাবানোর অন্যতম কারণ। মূলত এই সমস্ত কারণগুলোই হাত-পা কামড়ানো অথবা হাত পা চাপানোর মূল কারণ।

হাত পা চাবানোর চিকিৎসা

হাত পা চাবানো অথবা হাত পা ব্যথা করে এই রোগের অনেক চিকিৎসা রয়েছে। আমাদের শরীরের ভিতরে এই সমস্যাটা দেখা দিলে আমরা শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ি। আমাদের যখন এই সমস্যাটা দেখা দিবে তখন দীর্ঘ সময় রেস্ট করতে হবে। কোন কাজ অথবা কোন পরিশ্রম করা যাবে না যদি করেন তাহলে এই সমস্যাটি আপনাদের ভিতরে বাসা বাঁধবে এবং প্রতিনিয়তই আপনারা এই সমস্যার সম্মুখীন হবেন। 

এছাড়া এই রোগের সমাধানের জন্য আপনার নিকটবর্তী হসপিটাল, ক্লিনিক, ফার্মেসিতে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ও ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।এছাড়া আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করেন আর রেস্ট না নেন প্রতিনিয়তই পরিশ্রম করে যান তাহলে কিন্তু এই সমস্যার সমাধান হবে না কারণ এই যে হাত-পা চাবানো অথবা ব্যথা করা এই সমস্যার মূল  চিকিৎসা হলো বিশ্রাম নেওয়া।

হাত পা চাবানোর ঘরোয়া চিকিৎসা

আপনাদের যদি হাত-পা চাবায় অথবা হাতে পায়ে ব্যথা অনুভব হয় তাহলে আপনি রেস্ট নিতে পারেন। যে সময় আপনার হাত-চাবাবে সেই সময় আপনি হাঁটাচলা বন্ধ করে দেন, এবং আপনার যেই স্থানে ব্যথা অনুভব হয় ঠান্ডা বরফ অথবা ঠান্ডা জাতীয় অন্য কোন জিনিস দিয়ে সেই স্থানে ম্যাসাজ করুন এবং আক্রান্ত মাংসপেশী কোন কিছু দিয়ে চাপ দিয়ে বেঁধে রাখুন। যখন  হাত পা  চাবানো বা ব্যথা অনুভব হয় তখন যদি সেই স্থানে কোন কিছু দিয়ে বেঁধে দেওয়া যায় তাহলে আপনার এই সমস্যাটা সমাধান হতে পারে। আর যদি ঘরোয়া চিকিৎসায় কাজ না করে তাহলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে।

হাত-পা চাবানোর কি কি সমস্যা অনুভব হয়

আমরা জানি যে হাত-পা চাবানো অথবা হাতে পায়ে ব্যথা করা এই সমস্যাটি প্রায় ৮০% মানুষেরই হয়ে থাকে আর এই হাত-পা চাবানো রোগটি হলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন, শরীরের সমস্ত মাংস পেশিতে টান ধরে থাকে, হাত পা কামড়ায় অথবা ব্যথা অনুভব হয়, শরীরে কোন শক্তি থাকে না, এবং শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাত পা চাবানো এই সমস্যাটি হলে সবচেয়ে বেশি হাতে পায়ে খিল লেগে যায় এবং সারা শরীরে ব্যথা অনুভব হয়। এই সমস্যাটি আপনাদের দেখা দিলে আপনারা অবশ্যই নিকটস্থ হসপিটাল অথবা ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিবেন। নিজে সুস্থ থাকুন এবং অন্যকে সুস্থ থাকার সুযোগ করে দিন।

হাত-পা চাবানো কমানোর ব্যায়াম

আমরা পায়ের উপরে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি ও চলাচল করি। আমাদের শরীরের সমস্ত ওজন বহন করে আমাদের দুইটা পা। আর আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যত কাজ রয়েছে আমরা সমস্ত কাজই হাতের মাধ্যমে করে থাকি সেজন্য আমাদের হাত-পা চাবানো অথবা ব্যথা অনুভব হওয়া বা হাতে পায়ে খিল লেগে যাওয়া এই সমস্যাটি প্রায় সবার মধ্যেই বিদ্যমান। এই সমস্যার সমাধানের ও অনেক উপায় রয়েছে তার ভিতরে অন্যতম উপায় হচ্ছে ব্যায়াম করা অথবা শরীর চর্চা করা। আমরা দৈনন্দিন জীবনে এই সমস্যার সমাধান করার জন্য আমাদের উচিত প্রতিদিন ব্যায়াম করা। এর ভিতরে কিছু ব্যায়াম রয়েছে যেমন মাংসপেশের নমনীয়তা বাড়াতে এই ব্যায়ামগুলো খুবই কার্যকরী:-

১.আপনার পা দুটিকে প্রশস্ত করুন এবং শরীরকে সোজা রাখুন।

২.সাইট বরাবর মেরুদন্ড সোজা রেখে একটি পাকে ৯০ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে বাকান। একই পদ্ধতিতে দুইটা পায়ে এই ব্যায়ামটি করুন।

৩.নিজের কাধ প্রশস্ত করে পা ফাঁকা করে দাঁড়ান। এই ব্যায়ামগুলো হচ্ছে পায়ের। চলুন এবার হাতের ব্যায়াম গুলো কি জেনে নেই।

১.দুই হাত সামনের দিকে দিয়ে মুটো করে ভাজ করে রাখুন।

২.আপনার হাতের মাংস পেশি টান টান করে ধরে রাখুন। এই সমস্ত ব্যায়ামগুলো করলে আপনার হাত পা চাবানো ও পায়ে ব্যথা অনুভব হওয়া এই সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন আর ব্যায়াম যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে করেন তাহলে আপনার এতে বিপরীত হতে পারে। এবং অতিরিক্ত সমস্যা হলে আপনি অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ও তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন।

হাত পা চাবানো ঔষধের নাম ও তার খাওয়ার নিয়ম

আমরা জানি যে হাত-পা চাবানো বা হাতে-পায়ে ব্যথা অনুভব হওয়া এই রোগটির অনেক রকম ওষুধ রয়েছে। তার ভিতরে কিছু ভালো ঔষধের নাম ও তার খাওয়ার নিয়ম গুলো উল্লেখ করে দেওয়া হলো:-

ক্যালমেট ডি,ডেল্টাসন এই ট্যাবলেট গুলো আপনি যতদিন খাবেন ততদিন সুস্থ সবল থাকবেন। হাত পা চাবনোর যত ওষুধ আছে তার ভিতরে এই ওষুধগুলো সবচেয়ে কার্যকরী ঔষধ। আসুন আমরা এই ওষুধের খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নেই, আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্ক না হন তাহলে প্রত্যেকদিন সকালে অথবা রাতে খাওয়ার পরে ভরা পেটে প্রত্যেকদিন একটা করে এই ট্যাবলেট গুলো সেবন করবেন। আর আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হন তাহলে প্রত্যেকদিন সকালে এবং রাত্রে ভরা পেটে এই ট্যাবলেট সেবন করবেন, দিনে দুইটা। এই ট্যাবলেট গুলা নিয়ম অনুযায়ী খেলে আপনি অবশ্যই উপকারিতা পাবেন।

হাত-পা চাবানো রোগীর কি খাবার খাওয়া উচিত

যে সমস্ত রোগীদের হাত-পা চাবানো অথবা ব্যথা অনুভব হয়, তাদের এটা হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি এবং শরীরের এই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করতে আমাদের প্রতিনিয়ত ভিটামিন অথবা ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। আমাদের খাবার ভিতরে প্রত্যেক দিন থাকতে হবে ফল মূল, মাছ মাংস, শাক সবজি, ডিম, দুধ ইত্যাদি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শাকসবজি খাওয়া খুবই প্রয়োজন কারণ শাকসবজিতে অনেক ভিটামিন রয়েছে। যেটা খেলে আমাদের শরীরের ভিটামিনের অভাব অথবা ঘাটতি পূরণ করে থাকে। মাছ ,মাংস, এবং দুধ ডিম এগুলো আমাদের শরীরের ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনের অভাব ও পূরণ করে থাকে। এ সমস্ত খাবারগুলো আমাদের প্রতিনিয়ত খাওয়া প্রয়োজন। তাহলে আমাদের শরীরের ভিটামিনের অভাব ও ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করবে।

পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না ।

comment url