পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি? পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম

পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি? পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম


অনেকের পেটে জীবাণু ঢোকার কারণে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার মত সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই সমস্যাটা অনেকের হলেও কয়েকদিনের মধ্যে আবার সেরে যায়। তবে কারো যদি ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা থেকে পানি শূন্যতার মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে তাহলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই পাতলা পায়খানা হলে আমাদের করণীয় কি বা পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম নিয়ে আজকের পোস্টে আলোচনা করা হলো।তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-



পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া কেন হয়


ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা অনেক কারণেই হতে পারে। এই বিষয়ে যদি আগে থেকেই জানা থাকে তাহলে রোগী সচেতন হয়ে যায়। যেমন:-


➡️ পেটে জীবাণুর আক্রমণ বা ইনফেকশন হলে পাতলা পায়খানার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এটা সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কয়েক দিনের মধ্যেই সেরে যায়। 


➡️ নরোভাইরাস নামের ভাইরাস আক্রমণ করলে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। 


➡️ ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত। 


➡️ যেকোনো ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। 


➡️ নির্দিষ্ট কোন খাবারে এলার্জি বা সেই খাবার সহ্য না হলে সমস্যাটি হতে পারে। 


➡️ অস্বাস্থ্যকর বা বাসি খাবার খেলে এটা হতে পারে। 


➡️অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও মসলার যুক্ত খাবার খেলে। তাছাড়া অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলেও পাতলা পায়খানা হতে পারে। 




সাধারণত এই সমস্যাগুলোর কারণে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। তাই এই বিষয়গুলোর দিকে আপনাদের অবশ্যই একটু লক্ষ্য রাখতে হবে। 


পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি 


অনেকেই মনে করে থাকেন পাতলা পায়খানা হলেই তাদের ডায়রিয়া হয়েছে। আমরা সকলেই জীবনের কোন না কোন সময় পাতলা পায়খানার সমস্যায় পড়েছি।পাতলা পায়খানা হলে সাধারণত এটা কয়েকদিনের মধ্যেই এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।তবে পাতলা পায়খানার যদি পানি শূন্যতার কারণে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এর দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।পাতলা পায়খানা হলে আপনারা নিচের ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে পারেন:-



খাবার স্যালাইন খেতে পারেনঃ যতবার পাতলা পায়খানা হয় ততবার এক প্যাকেট বা আধার লিটার করে খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। যদি দোকানের স্যালাইন না খেতে চান তাহলে ঘরোয়া উপায়ে স্যালাইন খেতে পারেন।তাছাড়া এই সময়ে চিড়ার পানি, ভাতের মাড় বা ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে। ভাতের মাড় এই সময়টাতে অল্প লবণ দিয়ে খেতে পারেন। 



জিংক ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারেঃ জিংক ট্যাবলেট পাতলা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমিয়ে আনতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যদি ১০ থেকে ১৪ দিনের জন্য ২০ মিলিগ্রাম করে জিংক ট্যাবলেট বা সিরাপ খান তাহলে পাতলা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনাটা অনেক কমে যাবে। 



প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারেঃ পেটে অস্বস্তির মত সমস্যা হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ খাওয়া যেতে পারে। কেননা পাতলা পায়খানা দূর করার জন্য প্যারাসিটামল দারুন কাজ করে থাকে। 



তাছাড়া পাতলা পায়খানা দূর করার জন্য আরও কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে খুব দ্রুতই উক্ত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। 



পাতলা পায়খানা দূর করা ঘরোয়া চিকিৎসা 


পাতলা পায়খানা দূর করার জন্য ঘরোয়া কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়ার কারণে রোগীর অনেক তৃষ্ণা লাগে। তাই এমন অবস্থায় এক লিটার পানিতে এক চামচ শুকনো ধনেপাতা ফুটিয়ে নিন। তারপরে অর্ধেক পানি অবশিষ্ট থাকলে পানি ছেকে ঠান্ডা করে ফেলুন। পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত রোগীকে এটি অল্প পরিমাণে দিতে হবে।



তাছাড়া পাতলা পায়খানা হলে এক কাপ বিশুদ্ধ পানিতে এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। তারপরে এটি প্রতিদিন সকালে ও বিকালে বা সন্ধ্যায় খালি পেটে খাবারের পরে খেতে হবে। এটি ধীরে ধীরে অন্ত্র পরিষ্কার করে থাকে।তাছাড়া অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা হলে আধা কাঁচা চামচ ভাজা জিরার সাথে এক কাপ দই বা ঘোল মিশিয়ে নিতে হবে।এটি খাওয়ার মাধ্যমে পাতলা পায়খানার সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। 



পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম


আমরা অনেকেই হঠাৎ ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে অনেক ধরনের ঔষধ খাওয়ার জন্য ছুটে থাকি।তবে বেশিরভাগ পাতলা পায়খানাতে কোন ধরনের ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। পানি ও লবণ যদি শরীর থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে সেটা স্যালাইনের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব। তবে অনেক ক্ষেত্রে পাতলা পায়খানা বন্ধ করার জন্য নিচের ট্যাবলেট গুলো ব্যবহার করার জন্য বলা হয়ে থাকে:-


➡️ metry


➡️ metro 400


➡️ amodis 


➡️ flontin 500


➡️ aprocin 500



পাতলা পায়খানা বন্ধ করার জন্য যদি এই ঔষধ গুলো খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।



গর্ভাবস্থায় পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম 


ডায়রিয়া কখনোই বেশিদিন স্থায়ী হয় না।তবে গর্ভাবস্থায় যদি ডায়রিয়া হয়ে থাকে এবং এই সমস্যাটা যদি কয়েকদিন স্থায়ী হয় তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের জানাতে হবে। কেননা অনেকদিন ডায়রিয়া থাকলে শরীরে খনিজ পদার্থ ও ইলেক্ট্রোলাইটের অসমতা, ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় যদি কখনো পাতলা পায়খানা একটানা হতে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। 


পাতলা পায়খানা হলে কি কি ফল খাওয়া যাবে 


পাতলা পায়খানা হলে কি কি ফল খাওয়া উচিত বা কোন ফল গুলো খাওয়া যাবে এই নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। পাতলা পায়খানা হলে কলা খাওয়া যেতে পারে। কেননা পাতলা পায়খানার জন্য শরীর থেকে পানির ও পুষ্টি উপাদান দূর হয়ে যায় যা কলা খেলে অনেকটা ঘাটতি দূর হয়। 



তাছাড়া এই সময়ে সামান্য লবন ও গোলমরিচের গুড়া দিয়ে আলু সিদ্ধ করে খেলে বা ভর্তা করে খেলে পাতলা পায়খানা অনেকটা কমে। তাছাড়া পাতলা পায়খানা চলাকালীন সময়ে কমলা,  ডাব,  ডালিম, বা তরমুজের জুস খাওয়া যেতে পারে। কেননা এগুলো শরীরে পানির মাত্রা ঠিক রাখবে এবং মাথা ঘোরানোর মত সমস্যা গুলো থেকে শরীরকে দূরে রাখবে। 



শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা পাতলা পায়খানা দূর করার উপায় বা পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম কি এই বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। 

পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না ।

comment url