বাংলাদেশে ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত

বাংলাদেশে ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত


বাংলাদেশে ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের আজকের আর্টিকেলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলুন। সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমাদের আজকের আলোচনায়। দেখুন আমাদের শরীর এমন একটা জায়গা, যেখানে সাধারণ থেকে জটিল নানা ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। যে কারণে প্রয়োজন পড়ে ঔষধ সেবনের, আবার কখনো কখনো অপারেশনেরও দরকার হয়। 



আমাদের শরীরের ভেতরে যখন জটিল রোগ বাসা বাঁধে তখন মূলত ল্যাপারোস্কপি অপারেশন করার প্রয়োজন পড়ে। এটি এমন একটি অস্ত্রপ্রচার পদ্ধতি যা বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে পেটে খুব ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়। এই সার্জারির মাধ্যমে এমন অনেক অপারেশন সম্পন্ন করা সম্ভব হয় কোনরকম কাটা ছেঁড়া না করেই। 


অনেকেই জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন, বাংলাদেশে ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত? আর তাদের সেই প্রশ্নের উত্তর দিতেই আমাদের আজকের আয়োজন। তাহলে আসুন শুরু করি। 

আমাদের আলোচনায় আজকে যা যা থাকছে: 


  • ল্যাপারোস্কপি কি?

  • কেন করা হয় ল্যাপারোস্কপি?

  • ল্যাপারোস্কপি করতে কত টাকা লাগে

  • ল্যাপারোস্কপি অপারেশন খরচ বাংলাদেশ

  • ল্যাপারোস্কপি মেশিন

  • বাংলাদেশে হার্নিয়া ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত?

  • সরকারি হাসপাতালে অপারেশন খরচ

  • হার্নিয়া অপারেশন খরচ কত?

  • জরায়ু অপারেশন খরচ কত?

  • এপেন্ডিসাইডস অপারেশনের খরচ কত বাংলাদেশে

  • সিস্ট অপারেশন খরচ কত

  • বাংলাদেশে পিত্তথলির পাথর অপারেশন খরচ কত?


ল্যাপারোস্কপি কি?


লেপারস্কোপি হচ্ছে একটি অপারেশন বা অস্ত্র প্রচার পদ্ধতি। যে পদ্ধতির মাধ্যমে এখন খুব সহজেই শরীরের ভেতরের যে কোন অপারেশন অধিক বেশি কাটাছেড়া না করেই সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়। বলতো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নের ফলে এই সুবিধা ভোগ করা সম্ভব হচ্ছে। 


এক কথায় বলা যায়, ল্যাপেরোস্কপি হচ্ছে অপারেশনের একটি সহজ ও আধুনিক পদ্ধতি, যা পূর্বের তুলনায় কম প্যারা দায়ক এবং সময় শাস্ত্রে একটি মাধ্যম। যা সাহায্যে শরীরের অনেকটা অংশ না কেটেও অপারেশন করা সম্ভব হয়।


ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি কী?


আমরা সাধারণত পেট কেটে ফেলা কে সার্জারি বলে থাকে। পেটের ভেতরে কোন সমস্যা দেখা দিলে যখন আমাদের অপারেশন করার প্রয়োজন পড়ে তখন সেই অপারেশন প্রক্রিয়াকে বলা হয় সার্জারি। একটা সময় ছিল যখন অপারেশন করতে পেটের অনেকটা অংশ কাটার প্রয়োজন হতো। 


কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে সাথে চিকিৎসা বিজ্ঞান এগিয়েছে ফলে পেট না কেটেও শুধুমাত্র কয়েকটা ফুটো করে অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে। মূলত কয়েকটি ছোট ছোট ফুটো দিয়ে ছোট ক্যামেরা ও অন্যান্য অংশ প্রবেশ করিয়ে পেটের ভেতরে টিভি পর্দায় দেখে অপারেশন করার মাধ্যম চালু হয়েছে এখন যাকে বলা হয় ল্যাপারোস্কপি সার্জারি। 


একটা সময় ছিল যখন এই চিকিৎসা করার জন্য দেশের বাইরে যেতে হতো সেই সাথে খরচ করতে হতো মোটা এমাউন্টের টাকা। কিন্তু এখন আমাদের দেশেও এই চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আর তাইতো সকলের মনে এই প্রশ্নটি বারবার ঘোরাফেরা করছে যে, বাংলাদেশে ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত? যা আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে আপনাদেরকে অবগত করব।


তবে হ্যাঁ সত্যি বলতে বর্তমান সময়টা এতটাই অ্যাডভান্স লেভেলে পৌঁছেছে যে, আপনি চাইলে নিঃসন্দেহে এটাও বলতে পারেন চিকিৎসার ক্ষেত্রে বর্তমান সময় কে ল্যাপারোস্কপিক সার্জারির যুগ বললেও বলা চলে। আশা করা যায় সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তির আরো উন্নয়ন ঘটবে এবং একটা সময়ে অপারেশন করতে এতোটুকুও কাটার প্রয়োজন পড়বে না। 


কেন করা হয় ল্যাপারোস্কপি?


মূলত পিত্তথলির চিকিৎসার জন্য ল্যাপারোস্কোপি করা হয়। আমাদের পেটে যেকোনো জটিল রোগের আগমন ঘটলে যদি অপারেশন করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে এই পদ্ধতিতে সার্জারি করা হয়ে থাকে। কেননা এটি একটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যার জন্য অতিরিক্ত কাটা ছেড়ার প্রয়োজন পড়ে না। 


অনেকের প্রশ্ন ল্যাপারোস্কপি দিয়ে কি কি অপারেশন করা সম্ভব হয়। আসলে ল্যাপরোস্কপিক সার্জারী প্রথম শুরু হয় পিত্তথলির অপারেশনের মাধ্যমে। তবে বর্তমানে এপেনডিসেক্টমী, হার্নিয়া, ডিম্বাশয় কিংবা জরায়ুর অপারেশ্‌ মলদ্বারের ক্যান্সার, লিভার সার্জারী, এবং অন্যান্য সার্জারী যেমন-কিডনির অপারেশন সব কিছুই এর মাধ্যমেও করা হচ্ছে। 


এই সার্জারির মূলত বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। সেগুলো হলো:

  • রোগী দুই-এক দিনের মধ্যেই বাড়িতে যেতে পারে। 

  • ক্ষুদ্র ছিদ্রের মাধ্যমে অপারেশন করা হয় বিধায় পরবর্তীতে দাগ থাকে না বললেই চলে। 

  • ল্যাপারোস্কোপিক মেশিনের সাহায্যে কাঁটা অপেক্ষা শুক্ষভাবে পিত্তথলি অপারেশন করা সম্ভব হয়।

  • ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে রক্তপাত কম হয় এবং অপারেশন এর পরবর্তীতে ব্যথাও কম হয়। 

  • এই চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আপাত দৃষ্টিতে ব্যয়বহুল মনে হলেও সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যয়, হাসপাতালে অবস্থান, যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ বিবেচনায় আনলে ল্যাপারোস্কপিক সার্জারী সাশ্রয়ী অপারেশন পদ্ধতি।

এবার চলুন জেনে নেই বাংলাদেশে ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত? সে সম্পর্কে।


বাংলাদেশে ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত?


বাংলাদেশে ল্যাপারোস্কোপিক অপারেশন খরচ প্রায় ৪০ হাজার টাকা। মূলত বাংলাদেশের এভারেস্ট অপারেশনের খরচ সরম নিম্ন ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি বাংলাদেশে থেকে ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন বা সার্জারি করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সর্বনিম্ন ৪০ হাজার টাকা জোগাড় করতে হবে। তবে হ্যাঁ, কখনো কখনো আপনার অবস্থানের উপর অর্থাৎ আপনার শারীরিক অবস্থার তারতমের উপর ভিত্তি করে খরচের পরিমাণ ৩৫-এ নামানো যেতে পারে। তবে এভারেজ খরচের জন্য মোটামুটি ৪০০০০ টাকা খরচ হয় ল্যাপারোস্কোপিক অপারেশন করতে। 


বাংলাদেশে হার্নিয়া ল্যাপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত?


বাংলাদেশে হার্নিয়া ল্যাবরোস্কোপিক অপারেশন খরচ প্রায় ৩৭ হাজার টাকা। আপনার শরীরের হার্নিয়ার সমস্যা ঠিক করার জন্য শুধু ছোট একটি ফুটো করা হবে এবং এই অপারেশনের প্যাকেজ মূল্য ৩৭ হাজার টাকা থেকে শুরু। 


আপনি মূলত হসপিটালে তিন দিন অবস্থানের সুযোগ পাবেন পাশাপাশি সকল প্রকার টেস্ট, ঔষধ ও আনুষঙ্গিক জিনিসের খরচ, ডাক্তারের ফ্রি, সেই সাথে অপারেশন থিয়েটারের চার্জ এই টাকার মধ্যেই কমপ্লিট করতে পারবেন। সুতরাং হার্নিয়া অপারেশন খরচ সর্বনিম্ন ৩৭০০০ টাকা।


জরায়ু অপারেশন খরচ কত?


জরায়ু অপারেশনের খরচ মূলত সমস্যার উপর নির্ভর করে অনেকটাই কম ভাড়া হয়ে থাকে। আপনার যদি জ্বরের সমস্যা অনেক কম হয়ে থাকে তাহলে সর্বনিম্ন ৩০ হাজার টাকার মধ্যে জরায়ু অপারেশন করে ফেলতে পারবেন। আর জরায়ুর সমস্যা যদি ক্রিটিক্যাল পর্যায়ে পৌঁছায় তাহলে ৫০ হাজারের বেশি টাকা লাগতে পারে অপারেশনের জন্য। 


ওভারিয়ান সিস্ট রিমুভার সার্জারি করতে কত টাকা লাগে?


বর্তমান সময়ে বহুল পরিচিত এবং মেয়েদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে ওভারিয়ান চেস্ট। যা গুরুতর পর্যায়ে গেলে অপারেশন ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা খোলা থাকে না। ভারতে মূলত এই চিকিৎসার জন্য অর্থাৎ অভারিয়ান সিস্ট রিমুভার সার্জারি করতে খরচ হয় দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকা। 



এপেন্ডিসাইডস অপারেশনের খরচ কত বাংলাদেশে


এপেন্ডিক্স অপারেশনের জন্য মোটামুটি এভারেজ খরচ করতে পারে ১-২ লক্ষ টাকা। আর এই খরচ মূলত ভারতে। তবে আপনি যদি বাংলাদেশী হয়ে থাকেন এবং বাংলাদেশের কোন হসপিটালে এই সার্জারি করেন তাহলে খরচের সীমা টা হয়তো কিছুটা কম হবে। 



বাংলাদেশে পিত্তথলির পাথর অপারেশন খরচ কত?



বাংলাদেশে পিত্তথলির পাথর অপারেশন খরচ এভারেজ ২০ হাজার টাকা। সুতরাং আপনার যদি পিত্তথলির পাথরের জন্য কোন সার্জারি প্রয়োজন হয় তাহলে সর্বনিম্ন ২০ হাজারের মধ্যে আপনি অপারেশন সম্পন্ন করতে পারবেন কিন্তু কখনো কখনো টাকার পরিমানটা বাড়তে পারে



পরিশেষে: সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, বাংলাদেশের রেপারোস্কপিক অপারেশন খরচ কত? এ সম্পর্কিত আমাদের আজকের আর্টিকেল এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং যেকোনো পোষ্টের নোটিফিকেশন সবার আগে পেতে আমাদের ফলো বা নোটিফিকেশন বাটনে ক্লিক করতে ভুলবেন না। আল্লাহ হাফেজ

পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না ।

comment url